নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ মোটরসাইকেলের আরোহী দুজনের কালো জ্যাকেট ধুলোয় সাদা হয়ে গেছে। চোখ-মুখ থেকে শুরু করে প্যান্ট, জুতো সবখানে ধুলোর আস্তরণ। বাতাসেও উড়ছে ধুলো আর ধুলো। দপদপিয়া-নলছিটি সড়ক ধরে চলতে গিয়ে তাদের এ দশা হয়েছে। ওই দুই যুবক হলেন- মাসুদ রানা ও গালিব তালুকদার। বাড়ি নলছিটি উপজেলায় কান্ডপাশা গ্রামে। তারা বাড়ি থেকে উপজেলা শহরে আসছিলেন। তারা বললেন, দুই বছর ধরে সড়কটি প্রশস্তকরণ ও পুনর্র্নিমাণের কাজ চলছে। এখনও দেওয়া হয়নি পিচ ঢালাই। ধুলোর কারণে সড়কটি দিয়ে চলাচলকারী কয়েক হাজার মানুষকে নিয়মিত ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। অন্যদিকে মাত্রাতিরিক্ত ধুলাবালির কারণে কারণে তৈরি হয়েছে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি। এতে মানুষের সর্দি, চর্মরোগ, কাশিসহ শ্বাসকষ্টজনিত রোগ বাড়ছে। এ সড়ক দিয়ে নিয়মিত চলাচল করেন ব্যবসায়ি আবুল হোসেন হাওলাদার। তিনি বলেন, এ সমস্যা আজকের নয়। অনেক দিন ধরে চলছে। সড়কের পাশের স্থাপনা কিংবা গাছ-পালা সবখানেই জমেছে ধুলোর আস্তরণ। তিনি অভিযোগ করে বলেন, সড়কটিতে সংস্কার কাজ ধীরগতিতে চলছে। এ অবস্থায় যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় করছেন ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেল ও অটোরিকশার চালকরা। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দপদপিয়া থেকে নলছিটি পর্যন্ত সড়কটি দিনের বেলায় ধুলোয় প্রায় অন্ধকার থাকে। ফলে যাত্রী ও পথচারীদের চোখ মুখ বন্ধ করে নাক চেপে ধরে সড়কে চলাচল করতে হচ্ছে। জনদুর্ভোগ কমাতে উন্নয়ন কার্যক্রম চলাকালীন বারবার পানি দেয়ার নিয়ম থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। যানবাহনের গতির সাথে উড়ে আসা ধুলায় সয়লাব আশপাশের এলাকা। দোকানপাট, হোটেল সবকিছুতে ধুলোর আস্তর জমছে। উড়তে থাকা ধুলোবালিতে ঝাপসা হয়ে আসে দৃষ্টিসীমা। এ অবস্থায় এখানকার মানুষের জীবনযাত্রায় নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বিশেষ করে রোগীদের উপজেলা সদরে নিয়ে যেতে চরম দুর্ভোগের মুখোমুখি হতে হয়। সওজ কর্তৃপক্ষের কাছে যেকোনো মূল্যে দ্রুত কাজ শেষ করার দাবি জানিয়েছে স্থানীয়রা। সড়কের পাশে চা দোকানি মনির মিয়া জানান, ধুলো ওড়ায় প্রায় সময় দোকানপাট বন্ধ রাখতে হয়। প্রতিদিন দোকানের সামনে তিন বেলা পানি ছিটাই, তারপরও কোনো কাজ হয় না। যানবাহনের গতির সাথে বাতাসে উড়ে আসা ধুলোয় দোকানের টেবিল চেয়ার সাদা হয়ে যাচ্ছে। কিছুক্ষণ পর পর মুছেও চেয়ার টেবিল পরিষ্কার রাখা যাচ্ছে না। সড়কটির দুরবস্থার কারণে অনেকে খুব বেশি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া উপজেলা শহরে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। এ বিষয়ে ঝালকাঠি সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ নাবিল হোসেন বলেন, করোনাভাইরাস মহামারির কারণে কয়েক মাস কাজের গতি কিছুটা মন্থর থাকলেও এখন স্বাভাবিক গতিতে চলছে সংস্কার কাজ। অবশিষ্ট কাজ দ্রুত শেষ হবে। তিনি আরও বলেন, সংস্কার কাজ চলাকালীন সময় ধুলো কমাতে পানি ছিটানোর জন্য ঠিকাদারকে নির্দেশনা দেওয়া আছে।
Leave a Reply